ভাস্কর্য ও মূর্তির মধ্যে পার্থক্য
মূর্তী ও ভাস্কর্যের মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই।
অনেকই ভাস্কর্য ও মূর্তির মধ্যে পার্থক্য দেখিয়ে গোঁজামিল দেওয়ার অপচেষ্টা করছে! এদের কুযুক্তি দেখে আমি শিহরিত! বঙ্গবন্ধুর মূর্তি স্থাপন করবেন। জানি, ইসলাম নিষেধ করলেও করবেন; কারণ দলীয় মত্ততায় আপনি এখন অন্ধ। ধর্মকর্ম দেখার সময় আপনার নেই। কিন্তু এটাকে ইসলামাইজ কেনো করতে যাচ্ছেন!! হারামকে হারাম বলে খেতে লজ্জা লাগলে খাওয়ার দরকার কী? আবার হারামকে হালাল বানিয়ে খেয়ে কাফের হওয়ার দরকার কী?
এটা এমন কি বিষয় হলো যে, ঘুরিয়ে প্যাঁচিয়ে হালাল বানাতে হবে? দেখাতে পারবেন এর স্বপক্ষে নবি রাসূলদের একটা বাণী, কিংবা কোরআন হাদিসের ক্ষুদ্র ইঙ্গিত? আমি আপনার জ্ঞানের দৈন্যতা দেখে অবাক হই, যখন আপনি মিশর, আরব আমিরাত, পাকিস্তান ও বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রের ভাস্কর্যের দৃষ্টান্ত দেখিয়ে হালাল ঘোষণা করছেন! প্রথম কথা হল, ইসলামের প্রমাণ কি মুসলিম রাষ্ট্রের কার্যাবলি, নাকি কোরআন হাদিস? তাছাড়া ওইসব রাষ্ট্র কি একশো পার্সেন্ট ইসলামি বিধানের উপর চলে? এককথায় বলা যায়, চলে না। তাহলে কীসের ভিত্তিতে আপনি এটাকে দলিল হিসেবে গ্রহণ করে নিজের অজ্ঞতা জাহির করছেন!!
ভাস্কর্য ও মূর্তির মাঝে মৌলিক পার্থক্য এটুকু যে, ভাস্কর্যকে ভক্তি করা হয় ঘরের ভেতরে। আর মূর্তিকে ভক্তি করা হয় রাস্তায় রাস্তায়। নয়তো ভাস্কর্য ও মূর্তি উভয়টাই অবিকল মানুষের রূপ। দোনোটার মাঝে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। মূর্তির সামনে হিন্দু সম্প্রদায় প্রভূর দূত হিসেবে অর্চনা করে, মাথা ঝুকায়, খাবার দেয়, ফুল দেয়, চরণসেবা করে ও প্রার্থনা করে। আর ভাস্কর্যের সামনে সুবিধাবাদী রাজনৈতিক ব্যক্তিরা মহামানব হিসেবে মাথা ঝুকায়, চরণসেবা করে, পুষ্পবর্ষণ করে ইত্যাদি।
আপনি বলছেন, ভাস্খর্য নির্মিত হয় শুধু স্মরণীয় প্রতিক হিসেবে। আচ্ছা তারপর যদি কেউ স্মরণ করতে গিয়ে শিরকগুলো করে, তাহলে দায়ভার কে নিবে? আপনি তখন শিরক উৎপাটনের জন্য ভাস্কর্য ভাঙতে পারবেন? ভাস্কর্য হবে আর শিরক হবে না, তা হতেই পারে না। যুগের অন্যসব ভাস্কর্য এর প্রমাণ।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অমর ব্যক্তি। বাঙালি জাতি যতদিন থাকবে জাতির পিতাকে তারা ভুলবে না, এটাই স্বাভাবিক। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি এতো দূর্বল নয় যে, তাকে স্মরণ করতে মূর্তি স্থাপন করতে হবে। মূর্তির কোনো প্রয়োজন নেই। বঙ্গবন্ধু মূর্তি ছাড়াই সবার হৃদয়ে জায়গা করে আছে ও থাকবে।
ভাস্কর্যের বিষয়টিকে সাধারণ ভাবে দেখার জো নেই। এটা ইসলামের গোড়ার সাথে সম্পৃক্ত। দুই কারণে একজন মুসলিম কাফের হয়ে যায়, মুসলিম পরিচয় বিলুপ্ত হয়ে যায়। এক. কুফর; দুই. শিরক। কুফর মানে আল্লাহ, নবি, কোরআন, পরকাল ইত্যাদিকে অস্বীকার করা। শিরক মানে আল্লাহর সমকক্ষ কাউকে বানানো। আল্লাহ ছাড়া কারো অর্চনা করা, কারো সামনে মাথা ঝুকানো। ভাস্কর্যের সামনে ভক্তি প্রদর্শন ও মাথা ঝুকানো স্পষ্ট শিরক। এটাকে উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই। আর ভাস্কর্য হলে এসব শিরক হবে না যে এর কোনো নিশ্চয়তা নেই; কারণ ভাস্কর্য বানানো হয়ই স্মরণের নামে এসব শিরক করার জন্যই।
তাছাড়া ভাস্কর্য স্থাপনই শরিয়তে গর্হিত কাজ। পৃথিবীর কোনো ফতোয়া বিভাগ সাম্প্রতিক সিস্টেমে ভাস্কর্য স্থাপন বৈধ ঘোষণা করবে না। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে ভাস্কর্য ও মূর্তি নির্মাতাদের বিরুদ্ধে বদদোয়া করে বলেছেন, لعن آلله المصورين
প্রাণীর আকৃতি নার্মাতাদের উপর আল্লাহ তাআলা লা’নত করুক!!
আল্লাহর প্রিয় রাসূল যার বিরুদ্ধে বদদোয়া করছেন, সেই বদদোয়া মিস্টেক হওয়ার সম্ভাবনা আছে? একটু ভাবুন একাগ্রচিত্তে!
রাসূলের হাদিস: মুসলিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা (একবার) মাসরূকের সাথে ইয়াসার ইবনু নুমাইরের ঘরে ছিলাম। মাসরূক ইয়াসারের ঘরের আঙিনায় কতগুলো মূর্তি দেখতে পেয়ে বললেনঃ আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) থেকে শুনেছি এবং তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছেন যে, (ক্বিয়ামাতের দিন) মানুষের মধ্যে সব থেকে শক্ত শাস্তি হবে তাদের, যারা ছবি তৈরি করে। [১২][মুসলিম ৩৭/২৬, হাঃ ২১০৯, আহমাদ ৩৫৫৮] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৫১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪১৩)
ফুটনোটঃ [১২] প্রাণীর ছবি আঁকা নিষিদ্ধ। প্রাকৃতিক দৃশ্য বা জড় বস্তু এর অন্তর্ভুক্ত নয়।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৯৫০ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
সহ্য করতে পারবেন তো? আরো দেখুন,
আবূ জুহাইফাহ (রাঃ)- এর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লা’নাত করেছেন উল্কি অঙ্কণকারিণী, উল্কি গ্রহণকারিণী, সূদ গ্রহীতা ও সূদ দাতাকে। তিনি কুকুরের মূল্য ও পতিতার উপার্জন ভোগ করতে নিষেধ করেছেন। চিত্রাঙ্কণকারীদেরকেও তিনি লা’নাত করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৩)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৩৪৭ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
আরো স্পষ্ট প্রমাণ নিন: মুসলিম ইবনু সুবায়হ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মাসরূক (রহঃ) এর সঙ্গে একটি গৃহে ছিলাম। সেখানে মারইয়াম (‘আঃ) এর (সদৃশ) ভাস্কর্য ছিল। মাসরূক (রহঃ) বললেন, এটি (পারস্য বাদশাহ) কিসরা’র ভাস্কর্য। আমি বললাম, না; এটি মারইয়াম (‘আঃ) এর ভাস্কর্য (সদৃশ)। সে সময় মাসরূক (রহঃ) বললেন, শুনো! আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামাতের দিবসে ভয়ঙ্কররূপে শাস্তি ভোগকারী হবে ছবি প্রস্ততকারীরা। (ই.ফা. ৫৩৫৯, ই.সে. ৫৩৭৭)
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৫৪৩২ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
আরো জানুন: আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অসুস্থতার সময় তাঁর এক সহধর্মিণী হাবাশা দেশে তাঁর দেখা ‘মারিয়া’ নামক একটি গীর্জার কথা বললেন। উম্মু সালামা এবং উম্মু হাবীবা (রাঃ) হাবাশায় গিয়েছিলেন। তাঁরা দু’জন ঐ গীর্জার সৌন্দর্য এবং তার ভিতরের চিত্রকর্মের বিবরণ দিলেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মাথা তুলে বললেনঃ সে সব দেশের লোকেরা তাদের কোন নেক্কার ব্যক্তি মারা গেলে তাঁর কবরে সেজদাস্থান নির্মাণ করত এবং তাতে তাদের চিত্রকর্ম অংকণ করত। তারা হলো, আল্লাহর নিকৃষ্ট সৃষ্টি।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১৩৪১ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
আরো পড়ুন: সা’ঈদ ইব্নু আবুল হাসান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) এর নিকট উপস্থিত ছিলাম, এমন সময়ে তাঁর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আবূ আব্বাস! আমি এমন ব্যক্তি যে, আমার জীবিকা হস্তশিল্পে। আমি এসব ছবি তৈরি করি। ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) তাঁকে বলেন, (এ বিষয়ে) আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি যা বলতে শুনেছি, তাই তোমাকে শোনাব। তাঁকে আমি বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি কোন ছবি তৈরী করে আল্লাহ্ তা’আলা তাকে শাস্তি দিবেন, যতক্ষণ না সে তাতে প্রাণ সঞ্চার করে। আর সে তাতে কখনো প্রাণ সঞ্চার করতে পারবে না। (এ কথা শুনে) লোকটি ভীষণভাবে ভয় পেয়ে গেল এবং তার চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে গেল। এতে ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, আক্ষেপ তোমার জন্য, তুমি যদি এই কাজ না-ই ছাড়তে পার, তবে এ গাছপালা এবং যে সকল জিনিসের প্রাণ নেই, তা তৈরী করতে পার। আবূ ‘আবদুল্লাহ (ঈমাম বুখারী) (রহঃ) বলেন, সা’ঈদ (রাঃ) বলেছেন, আমি নযর ইব্নু আনাস (রাঃ) হতে শুনেছি তিনি বলেছেন, ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) হাদীস বর্ণনা করার সময় আমি তার কাছে ছিলাম। ঈমাম বুখারী (রহঃ) আরো বলেন, সা’ঈদ ইব্নু আবূ আরুবাহ (রহঃ) একমাত্র এ হাদীসটি নযর ইব্নু আনাস (রহঃ) হতে শুনেছেন।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২২২৫ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
আরো নিন: আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য প্রানীর ছবিওয়ালা একটি বালিশ তৈরি করেছিলাম। যেন তা একটি ছোট গদী। অতঃপর তিনি আমার ঘরে এসে দু’দরজার মধ্যে দাঁড়ালেন আর তাঁর চেহারা মলিন হয়ে গেল। তখন আমি বললাম, এ বালিশটি আপনি এর উপর ঠেস দিয়ে বসতে পারেন সে’ জন্য তৈরি করছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি কি জান না যে ঘরে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে ফেরেশতা প্রবেশ করে না। আর যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি আকেঁ তাকে কিয়ামতের দিন শাস্তি দেয়া হবে? (আল্লাহ্) বলবেন, ‘বানিয়েছ, তাঁকে জীবিত কর।’
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩২২৪ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
জানুন রাসূলের অবস্থান সম্পর্কে: আয়িশা (রাঃ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট আসলেন। তখন ঘরে একখান পর্দা ঝুলানো ছিল। যাতে ছবি ছিল। তা দেখে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর চেহারার রং পরিবর্তিত হয়ে গেল। এরপর তিনি পর্দাখানা হাতে নিয়ে ছিঁড়ে ফেললেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকেদের মধ্যে বললেনঃ কিয়ামাতের দিন সবচেয়ে কঠিন শাস্তি হবে ঐসব লোকের যারা এ সব ছবি অঙ্কণ করে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৬৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৬৬)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬১০৯ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
নির্দেশনা দেখে কী বুঝেন: আবুল হাইয়্যাজ আল আসাদী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আলী (রাঃ) বলেন, আমি কি তোমাকে এমনভাবে পাঠাব না, যে কাজে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে পাঠিয়েছিলেন? তা হচ্ছে কোন (জীবের) প্রতিকৃতি বা ছবি দেখলে তা চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিবে এবং কোন উচূ ক্ববর দেখলে তা ভেঙ্গে দিবে। (ই.ফা. ২১১২, ই.সে. ২১১৫)
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২১৩৩ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস।
এভাবে অসংখ্য হাদিস দ্বারা বুঝা যায়, ভক্তি করা না হলেও ভাস্কর্য নির্মাণ কবিরা গুনাহ ও নাজায়েজ। আর ভক্তি করলে তো শিরক করার কারণে ইসলাম থেকেই বেরিয়ে যাবে।
প্রিয় মুসলমান ভাই, শুধু দল করার কারণে অন্ধ হয়ে যাবেন না। হালালকে হালাল বলুন। হারামকে হারাম বলুন। দলের কারণে হারামকে হালাল বললে একদিন ঠিকই ধরা খাবেন, যেদিন আপনার দল আপনার কোনো কাজে আসবে না। যেদিন আপনার পিতা মাতা, সন্তান সবাই আপনার থেকে পলায়ন করবে। মনে রাখবেন যে ব্যক্তি খারাপ কাজ চালু করবে, ভবিষ্যতে সেই খারাপ কাজ যতজন করবে সবার গুনাহ তার আমল নামায় লেখা হবে:
জারীর বিন আব্দুল্লাহ বিন জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন উত্তম পন্থার প্রচলন করলো এবং লোকে তদানুযায়ী কাজ করলো, তার জন্য তার নিজের পুরস্কার রয়েছে, উপরন্তু যারা তদানুযায়ী কাজ করেছে তাদের সমপরিমাণ পুরস্কারও সে পাবে, এতে তাদের পুরস্কার মোটেও হ্রাস পাবে না। আর যে ব্যক্তি কোন মন্দ প্রথার প্রচলন করলো এবং লোকেরা তদানুযায়ী কাজ করলো, তার জন্য তার নিজের পাপ তো আছেই, উপরন্তু যারা তদানুযায়ী কাজ করেছে, তাদের সমপরিমাণ পাপও সে পাবে, এতে তাদের পাপ থেকে মোটেও হ্রাস পাবে না। [২০১]
ফুটনোটঃ [২০১] মুসলিম ১০১৭, তিরমিযী ২৬৭৫, নাসায়ী ২৫৫৪, আহমাদ ১৮৬৭৫, ১৮৬৯৩, ১৮৭০১; দারিমী ৫১২। তাহক্বীক্ব আলবানী: সহীহ।
সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ২০৩ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
খারাপ কাজের সহযোগী হবেন না। না হয় সেই খারাপ কাজের একটি অংশ আপনার আমল নামায় নিবন্ধিত হবে:
আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসলো। অতঃপর সে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললো, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! সে লোকটি সম্পর্কে আপনি কী মনে করেন, যে একটি সম্প্রদায়কে মুহাব্বাত করে অথচ সে তাদের সাথে মিলিত হয়নি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যে যাকে মুহাব্বাত করে সে তার সঙ্গেই থাকবে। (ই.ফা. ৬৪৭৭, ই.সে. ৬৫২৯)
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৬৬১১ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
আপনার দল আপনাকে যাই বলবে সবকিছু অনুসরণ করবেন না। দিনশেষে পস্তাবেন:
আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ্ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ যতক্ষণ আল্লাহর নাফরমানীর নির্দেশ দেয়া না হয়, ততক্ষণ পছন্দনীয় ও অপছন্দনীয় সকল বিষয়ে প্রত্যেক মুসলিমের জন্য তার মান্যতা ও আনুগত্য করা কর্তব্য। যখন নাফরমানীর নির্দেশ দেয়া হয়, তখন আর কোন মান্যতা ও আনুগত্য নেই। [২৯৫৫; মুসলিম ৩৩/৮, হাঃ ১৮৩৯] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৬৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৫৯)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৭১৪৪ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস।
সবকিছুতেই রাজনীতি টেনে আনা সুস্থ মস্তিষ্কের কাজ নয়। এই দাবির ক্ষেত্রেও যদি বিএনপি জামায়াতের গন্ধ পান এবং বঙ্গবন্ধু বিরোধিতার ট্যাগ দেন, তাহলে আপনি তো অসুস্থ। আচ্ছা, এতে কারো দালালির গন্ধ যদি পেয়েও থাকেন, তারপরও শরিয়ত কি ফেলে দিতে পারবেন?
সর্বশেষ রাসূলের একটি নির্দেশ শুনিয়ে দিতে চাই। যেই নির্দেশনা টি কিছুদিন আগে মার্কিন জনগণের উদ্দেশে পাঠ করে শুনিয়েছিলেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বাইডেন। আপনার দায়িত্ব কী, জেনে নেন সরাসরি রাসূলের মুখ থেকে:
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, ‘‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোন গর্হিত কাজ দেখবে, সে যেন তা নিজ হাত দ্বারা পরিবর্তন করে দেয়। যদি (তাতে) ক্ষমতা না রাখে, তাহলে নিজ জিভ দ্বারা ( উপদেশ দিয়ে পরিবর্তন করে)। যদি (তাতেও) সামর্থ্য না রাখে, তাহলে অন্তর দ্বারা (ঘৃণা করে)। আর এ হল সবচেয়ে দুর্বল ঈমান।’’[১]
ফুটনোটঃ [১] সহীহুল বুখারী ৯৫৬, মুসলিম ৪৯, তিরমিযী ২১৭২, নাসায়ী ৫০০৮, ৫০০৯, আবূ দাউদ ১১৪০, ৪৩৪০, ইবনু মাজাহ ১২৭৫, ৪০১৩, আহমাদ ১০৬৮৯, ১০৭৬৬, ১১০৬৮, ১১১০০, ১১১২২, ১১১৪৫, ১১৪৬৬, দারেমী ২৭৪০১
রিয়াদুস সলেহিন, হাদিস নং ১৮৯ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
আল্লাহ তাআলা আমল করার তৌফিক দান করুন!