প্রথম বিশ্বযুদ্ধ | World War 1 | Bangla Documentary
প্রতিষ্ঠিত সাম্রাজ্যের পতন, একাধিক নতুন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় কিংবা ৭ কোটি সেনার অংশগ্রহণের মত আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনার সম্মিলন ঘটেছিল ১ম বিশ্বযুদ্ধে। এ বিশ্বযুদ্ধের মত ভয়াবহতা ও ধ্বংসযজ্ঞ বিশ্ববাসী অতীতে কখনো প্রত্যক্ষ করেনি। ১৯১৪ সালের ২৮ জুলাই অস্ট্রিয়ার যুবরাজ আর্কডিউক ফার্ডিনান্ডের হত্যার মধ্য দিয়ে ১ম বিশ্বযুদ্ধের যুদ্ধের সূচনা হয়। এরপর টানা ৪ বছর ৩ মাস ২ সপ্তাহ ব্যাপী বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের ডামাডোল ছড়িয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়ে ১৯১৮ সালের ১১ নভেম্বর এ মহা যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।
সাম্রাজ্যের পতন আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনার সম্মিলন ঘটেছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধে
বিশ্বযুদ্ধের মত ভয়াবহতা ও ধ্বংসযজ্ঞ বিশ্ববাসী অতীতে কখনো প্রত্যক্ষ করেন 1914 সালের 28 জুলাই অস্ট্রিয়ার যুবরাজ ফাহাদ হত্যার মধ্য দিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয় এরপর টানা 4 বছর 3 মাস 2 সপ্তাহ ব্যাপী বিশ্বযুদ্ধের ডামাডোল ছড়িয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়ে হাজার 1918 সালের 11 ই নভেম্বর এর যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে
1914 সালে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন যুবরাজ হত্যাকারী জাতিগোষ্ঠীর অস্ট্রিয়া আক্রমণ করে যুদ্ধ শুরু হলেও মূলত প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হবার বীজ রোপন করা হয়েছিল অস্ট্রিয়া তখন সার্বিয়া আক্রমণ করে যুবরাজ ফার্ডিন্যান্ডের হত্যার মধ্য দিয়ে যুদ্ধ শুরু হলেও মূলত প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হবার বীজ রোপন করা হয়েছিল আরও বহু বছর আগেই
সেসময় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত জটিল ও গোপনীয়তায় ভরা ফ্রান্সের সাথে ঐতিহাসিক শত্রুতার কারণে বৃটেনের জার্মানির সাথে বন্ধু ভাবাপন্ন সম্পর্ক ছিল কিন্তু পরবর্তীতে জার্মানির ব্রিটেন এর সাথে নও প্রযুক্তিতে পাল্লা দিতে শুরু করায় সম্পর্কটি হয়ে ওঠে প্রতিযোগিতামূলক
অনুষ্ঠান যুদ্ধের পর থেকে জার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যকার সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে ফলস্বরূপ ফ্রান্স রাশিয়ার সাথে মৈত্রী করে অন্যদিকে সাম্রাজ্য রাশিয়াকে হুমকি হিসেবে দেখার কারণে জার্মানির সাথে মৈত্রী চুক্তি করে উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ইউরোপের প্রধান পরাশক্তিগুলো রাজনৈতিক কারণের পাশাপাশি সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে মনোযোগী হয়ে ওঠে অবিশ্বাসের দোলাচলে এসময় পরাশক্তিদের কাছে ইউরোপ হয়ে ওঠে গোপন চুক্তির আঁতুড়ঘর পরাশক্তিগুলোর মধ্যে পারস্পারিক সন্দেহ ও অবিশ্বাস থেকেই বিভিন্ন চুক্তি হতে থাকে আর সেসব চুক্তি প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কে ত্বরান্বিত করে
1872 সালের রাশিয়া জার্মানি ও অষ্ট্রিয়ার মধ্যে ত্রিশক্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় কিন্তু 1878 সালের দিকে রাশিয়ার সাথে সম্পর্কের অবনতির কারণে চুক্তিটি কার্যকারিতা হারায় এই চুক্তির কার্যকারিতা 1880 আশির দশকে জার্মানি ও অষ্ট্রিয়ার মধ্যে নতুন চুক্তি স্বাক্ষর হয় বেশকিছু সংঘর্ষ ও বিরোধীদের সংঘর্ষ রাশিয়ার সাথে অস্ত্রনিরোধ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পটভূমি তৈরিতে সাহায্য করেছিল
19 ত্বকের শিল্প বিপ্লবের ফলে উৎপাদিত পণ্যের নতুন বাজার সৃষ্টি কিংবা কাঁচামালের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার প্রয়াসে ব্রিটেন ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যকার অর্থনৈতিক প্রতিযোগীতায় পরিক্রমায় সামরিক সংঘাতে দিকে মোড় নিতে থাকে সে সময় ব্রিটেন ফ্রান্স সহ ইউরোপীয় পরাশক্তিগুলো এশিয়া-আফ্রিকার সহ বিভিন্ন অঞ্চলের ঔপনিবেশিক শাসন শুরু করে
পরবর্তীতে সেসব উপনিবেশের কারণে পরাশক্তিগুলোর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয় রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যবাদ কিংবা উপনিবেশিকতা কে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণ হিসেবে আখ্যায়িত করা হলেও অনেক বিশ্লেষকের মতে ইউরোপীয় জাতীয়তাবাদের বিকাশে মূলত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে ইউরোপে জাতীয়তাবাদের ধারণা এতটাই প্রবল হয়ে ওঠে যার ফলে কোন সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেয়ে শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে সমাধান করাটাই অধিক গৌরবের মনে করা হতো তাই পরাশক্তি দেশ গুলোর জাতীয়তাবাদী ধারণা ও আগ্রাসী মনোভাব এই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়
জার্মানির প্রথমে অস্ট্রেলিয়া আক্রমণ করার মধ্য দিয়ে যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটে সেখানে পরাশক্তিগুলোর দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে যুদ্ধে পরিণত হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের একদিকে ছিল অস্ট্রিয়া জার্মানি বুলগেরিয়া যারা মূলত কেন্দ্রীয় শক্তি হিসেবে পরিচিত ছিল অন্যদিকে মিত্রশক্তি বলা হয় সার্বিয়া রাশিয়া ব্রিটেন ফ্রান্স মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে ব্রিটেন ফ্রান্স অভিযোগে জার্মানি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাতটি জাহাজ ডুবিয়ে দেয় এর প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির অক্ষশক্তির পরাজয় নিশ্চিত হয়ে পড়ে
চার বছর স্থায়ী এই যুদ্ধে মিত্রশক্তির কাছে কেন্দ্রীয় শক্তির পরাজয়ের মধ্য দিয়ে সভ্য যুগের অন্যতম প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে দীর্ঘ চার বছর স্থায়ী এই যুদ্ধে প্রায় দেড় কোটি মানুষ প্রাণ হারায় এবং দুই কোটি মানুষ আহত হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে 186 বিলিয়ন মার্কিন ডলার ও পরোক্ষভাবে প্রায় 10 মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয়
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব রেখেছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ফরমান অটোমান সাম্রাজ্যের
সাম্রাজ্যের পতন হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর অটোমান সাম্রাজ্যের অধিকাংশ এলাকা ও ব্রিটেনের তাদের নিজেদের অধীনে নিয়ে আসে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ করে জাতিপুঞ্জের মত বিশ্ব শান্তি সংস্থা গড়ে তোলা হয় এই সংস্থাটি পরবর্তীতে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এটিই ছিল বিশ্বব্যাপী প্রথম সামষ্টিক কোনো উদ্যোগ এর সময় বেশ কিছু দেশের শাসনতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক কাঠামো পাশাপাশি ক্ষমতার পরিবর্তন হতে শুরু করে হাজার 917 সালে রাশিয়ায় বলশেভিক ইতালিতে
1922 সালে ফ্যাসিস্টদের ক্ষমতা গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব ছিল বলেই ধারণা করা হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মিত্র শক্তি পরাজিত জার্মানি সহ অন্যান্য দেশগুলোর কাছ থেকে বিভিন্ন সুবিধা আদায় করতে থাকে এসময় মিত্রশক্তির দেশ গুলো এক প্রকার জোর পূর্বক ভাবে পরাজিত কেন্দ্রীয় শক্তি দেশগুলোর সাথে চুক্তি চুক্তি অস্ট্রেলিয়া শান্তি চুক্তি চুক্তি স্বাক্ষর করে আর এই চুক্তিগুলোর অধিকাংশই ছিল একপক্ষীয় অসম্মানের
1919 সালে জার্মানির সাথে অপমানজনক ভার্সাই চুক্তি স্বাক্ষর করা হয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল জার্মানির ব্রিটেন ফ্রান্স জাপান শক্তির কিছু করার পাশাপাশি জার্মানিকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের জন্য যুদ্ধাপরাধী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় এমনকি জার্মানির কাছ থেকে অযৌক্তিকভাবে যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়
জার্মানির উপর চাপিয়ে দেয়া এসব শর্তের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে আর এই ধীরে ধীরে জাতীয়তাবাদকে শক্তিশালী ও বিস্তৃত করে তোলে
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে হিটলার ও মুসোলিনির একনায়কদের ক্ষমতায় আসার পথ তৈরি করেছে ঠিক তেমনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পথকে প্রশস্ত করেছে আর তাই প্রায় সকল বিশ্লেষকই এক বাক্যে স্বীকার করেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মধ্যেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বীজ নিহিত ছিল
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে প্রথমবারের মতো মাটি ছেড়ে আকাশে পৌঁছে যায় হাজার 1918 সালের মধ্যে জার্মানি প্রায় 50 হাজার বিমান নির্মাণ করে
1917 সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকার সরকার ব্যস্ত ছিল উড়োজাহাজ আবিষ্কারকদের পেটেন্ট এর যুদ্ধ থামাতে